ঘুরে আসা ভালোবাসার নক্ষত্রবাড়ি রিসোর্ট।

যান্ত্রিক জীবনের যাতা কলে পিষ্ট হতে হতে জটিলতায় যখন হাঁপিয়ে পরছিলাম তখন একটু হাফছেড়ে নিঃশ্বাস নিতে গেলাম, অদূরে অবস্থিত ছায়াঘেরা, পাখি ডাকা, নির্মল, নির্জন সুন্দর পরিবেশের নক্ষত্রবাড়ি রিসোর্টে (Nokkhottrobari Resort)
ঘন সবুজ পরিবেশে অবস্থিত এই রিসোর্টে আসার পর যেনো হারিয়ে গেলাম এক সম্পূর্ণ ভিন্ন জগতে। এখানে যে শুধু প্রকৃতির কাছাকাছি আসতে পেরেছি তাই নয় বরং অন্যান্য সদস্যদের আনন্দ প্রদানের পাশাপাশি ঝেড়ে ফেলতে পেরেছি সকল ক্লান্তি এবং অবসাদ।
নাট্য অভিনেতা, পরিচালক, স্থপতি তৌকির আহমেদ এবং অভিনেত্রী বিপাশা হায়াত বানিজ্যিক উদ্দেশ্যে গাজীপুর (Gazipur) জেলার রাজেন্দ্রপুরে দৃষ্টিনন্দন নক্ষত্র বাড়ি রিসোর্ট প্রতিষ্ঠা করেন।
নক্ষত্র বাড়ি রিসোর্টের সদর দরজা দিয়ে ডোকার পরই আমার চোখ আটকে গেলো পুকুরপাড়ে। আম, জাম, নারকেল, কৃষ্ণচূড়াসহ নানা প্রজাতির গাছে ঠাসা চারপাশ। নাম না-জানা পাখির কিচিরমিচির আর বাতাসের শন শন শব্দ ছাড়া আর কিছু শোনা যায় না। হাঁস সাঁতরানো পুকুরের এক পাশ ধরে সারি সারি ‘ওয়াটার কটেজ’ যেন পানিতেই ভেসে আছে। শণ, খেজুরপাতার পাটি আর কাঠের তৈরি এসব ঘরের ভেতর আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা। চারদিকে সবুজ আর সবুজ। পুকুরভরা টলমলে পানি। গ্রামীণ আবহে আরামদায়ক জীবনযাপন।


রিসোর্টের ভেতর শুরুতেই রয়েছে নান্দনিক একটি হোটেল। আছে চমৎকার ডিজাইনে বানানো তিনতলা কনফারেন্স সেন্টার ও রেস্তোরাঁ—যার সামনে সুইমিংপুলে নীল জলের প্রশান্তি। চাইলে বারবিকিউ পার্টির আয়োজন করা যেতে পারে এখানে।



আমার কাছে মনে হয়েছে যেনো নক্ষত্রবাড়িটির প্রতিটি স্থান ব্যবহার করা হয়েছে নান্দনিকভাবে। আঙিনার এক পাশে ছোট্ট ঝরনা, যেখানে পদ্ম আর শাপলা ফুলের মিতালি গড়ে উঠেছে। পুকুরে মাছধরা বা নৌকায় চড়েও সময় বেশ ভালোই কাটাতে পেরেছি আমি।
খেলাধুলার জন্য রয়েছে ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিস, বিলিয়ার্ড ইত্যাদির ব্যবস্থা। জোড়া দুটি পুকুরের মাঝে কাঠের সাঁকোতে দাঁড়িয়ে উপভোগ করতে পারেন ঝিলের জলে ফোটা শত শত লাল শাপলা। 
রিসোর্টের ভেতর রেস্তোরাঁয় সব ধরনের বাংলা খাবার ছাড়াও থাই, চায়নিজ, জাপানিজ, ইন্ডিয়ান খাবার পাওয়া যায়। নক্ষত্র বাড়ি রিসোর্টে থাকতে প্রতি সিঙ্গেল কটেজের ভাড়া পড়ে আট হাজার ৫০০ টাকা, ফ্যামিলি কটেজ ১৭ হাজার টাকা, যার সঙ্গে পাওয়া যায় সকালের নাশতা, সুইমিংপুল এবং ফলভরা ঝুড়ি। নৌকাভ্রমণ, টেবিল টেনিস, বিলিয়ার্ড খেলা প্রতি ঘণ্টা ৩০০ টাকা, মাছধরা ঘণ্টায় ৫০০ টাকা। না থাকতে চাইলে শুধু প্রবেশ মূল্য দিয়ে দিনমান ঘুরে আসা যাবে। তাতে লাগবে জনপ্রতি ৫০০ টাকা।
দুটি কনফারেন্স সেন্টার আছে এখানে। প্রতিটির ধারণক্ষমতা ২০০ জন করে। এ ছাড়া আছে ২০ জনের মিনি কনফারেন্স রুমও।




দিনের পর রাতের আঁধারে এখানে এক নতুন আবহের সৃষ্টি হয়। ঝিঁঝি পোকার ডাক আর টিমটিমে আলোয় প্রিয়জনের সঙ্গে সময়টা মধুরই হবে—যা কিনা অল্প একটু হাসির মতো লেগে থাকবে জাম আর জামরুলের পাতায়।
প্রায় ২৫ বিঘা জমির উপর নিমির্ত এই রিসোর্টে রয়েছে দিঘী, কৃত্রিম ঝর্ণা, কনফারেন্স হল, সুইমিং পুল, রেস্টুরেন্ট, একটি আবাসিক ভবন বা বিল্ডিং কটেজ এবং কাঠ, বাঁশ ও ছনের তৈরী শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ১১ টি কটেজ। এখানে সকাল, দুপুরের ও রাতের খাবারের আয়োজন রয়েছে। নক্ষত্রবাড়ি রিসোর্টে আগত অথিতিদের প্রত্যেক পরিবারের তিন জন ফ্রি সুইমিং পুল ব্যবহারের সুযোগ পান আর বাকিদের এক্সট্রা চার্জের বিনিময়ে পুল ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। পূর্ণিমা দেখা, ব্যাঙ ও ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক শুনা কিংবা জোনাকির আলোয় প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যেতে নক্ষত্রবাড়ি রিসোর্টে সময় পেলে আপনিও ঘুরে আসতে পারেন।

নক্ষত্রবাড়ি রিসোর্টে যোগাযোগ করতে:

House # 268 (2nd Floor), Road # 19,
New DOHS, Mohakhali.
Dhaka # 1206
ফোন নাম্বার : 88+ 02-9835173, 01772-224281, 01772-224282, 01977-356165, 01771-799410
ইমেইল : resort@nokkhottrobari.com
ওয়েবসাইট :nokkhottrobari.com

Comments

Post a Comment

Popular posts from this blog

কবিতা - আবার ঈমান আনো

Ramadan